জানেন বাংলার সাল, তারিখ কীভাবে গণনা করা হয়? কীভাবে শুরু হয়েছিল?
আজকে বাংলা তারিখ
ইংরেজি তারিখ আমাদের সবার নখদর্পণে কিন্তু আজকে বাংলার কত তারিখ কি যদি আপনাদের কেউ জিজ্ঞেস করে তাহলে পেপার দেখে, ফোন ঘেঁটে আপনারা সেই তারিখ খুঁজে বের করবেন।
বাঙালি হিসেবে আমাদের বাংলা তারিখ সর্বদাই জানা উচিত। কিন্তু ২৫ শে বৈশাখ, ২২ শে শ্রাবণ এবং ১লা বৈশাখ বাদ দিলে আমরা বাংলা তারিখ কোনোটাই মনে রাখতে পারিনা। শুধু বাংলা তারিখ নয় বাংলা মাস এবং বছরের ক্ষেত্রেও ঘটনাটা সেই একই।
২০২২ এর পর ২০২৩ আসতে চলেছে খুব শীঘ্রই সেটা আমরা জানি কিন্তু বাংলার কোন বছর আসতে চলেছে তা আমরা অনেকেই জানিনা। অথচ আমরা বাঙালি, বাংলা বছর, বাংলা মাস এবং বাংলা তারিখ আমাদের নখদর্পণে থাকা উচিত। বাংলা কি মাস, আজকে বাংলা মাসের কত তারিখ, এটি বাংলা কোন সন এগুলি না জানা বাঙালি হিসেবে খুবই লজ্জার।
আমাদের এই সাইটের মাধ্যমে আপনারা বাংলা তারিখ আজ কত, বাংলা কি মাস চলছে, কোন বাংলা বছর চলছে সবই জেনে ফেলতে পারবেন। অর্থাৎ বাংলা ক্যালেন্ডার আপনারা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
এবারে চলুন আমরা জেনেনি বাংলা ক্যালেন্ডারের ইতিহাস। এই বাংলা বছর, বাংলা মাস ও দিনগুলির ইতিহাস এবং গুরুত্ব জানা অত্যাবশ্যক।
বাংলা তারিখ -এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হল ১ লা বৈশাখ। এই দিন থেকেই বাংলার নতুন বছর শুরু হয়। সম্রাট আকবর এটি চালু করেছিলেন।
এই দিনটিকে শুভ মনে করে ব্যবসায়ীরা দোকানে হালখাতা করেন। এখন ইংরেজি তারিখের রমরমা হলেও আগে মানুষ বাংলা তারিখ, বাংলা মাস এবং বছরের হিসাব রাখতেন। বছর শুরুর এই দিনটিতে পুরোনো খাতা সরিয়ে তার জায়গায় নতুন খাতা আনা হয়। এই প্রথা বছরের পর বছর চলে আসছে যেখানে ক্রেতারা নিজের ধার বাকি শোধ করেন এবং বিক্রেতাও খুশি মনে তাদের মিষ্টির বাক্স উপহার দেন।
তবে বাংলা তারিখ এবং বাংলা মাস -এর গুরুত্ব শুধু এখানেই থেমে নেই। শস্য বোনা থেকে ফসল কাটার সমস্ত প্রক্রিয়া আমাদের বাংলার কৃষকেরা বাংলা মাস অনুযায়ীই করে থাকেন। ফসল ফলে নতুন ধান যখন ঘরে আসতো তখন নবান্ন উৎসব হত। অঘ্রান মাস এই কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আগেকার দিনে বছরে দুবার ধানের শস্য বপন করা হত। রোপা ধানকে কৃষকেরা রোপন করতেন আষাঢ় মাসের একদম শুরুর দিকে এবং ফসল কাটতেন কার্তিক মাসে।
ভ্যাদ্রি ধান অর্থাৎ আউশ ধানের ফলনের সাথেও বাংলা মাস সংযুক্ত রয়েছে। কালবৈশাখীর সময়কাল এলেই কৃষকরা আউশ ধান চাষ করা শুরু করতো। কারণ এর ফলনে বৃষ্টির প্রয়োজন। ভাদ্র মাসে এই ফসল কাটা হতে। এই কারণেই একে ভ্যাদ্রি ধানও বলা হয়।
শুধু ফসল কাটা নয় তার পাশাপাশি বিভিন্ন উৎসবের ক্ষেত্রেও বাংলা মাস এবং তারিখের ভূমিকা রয়েছে। শীতকালে বাংলা মাস অনুযায়ী পিঠে পুলির উৎসব হয়। এটি হল খেজুরের রস এবং গুড়ের মরশুম।
এখনও বাঙালি হিন্দুদের পূজা পার্বণ থেকে শুরু করে অন্নপ্রাশন, বিয়ে, কোষ্ঠী বিচার, রাশি এই সবকিছুই বাংলা তারিখ এবং বাংলা মাস বিচার করে করা হয়। এখনও অনেক মানুষ কোনো শুভ কাজ শুরু করার আগে বাংলা তারিখ এবং বাংলা মাস দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেন।
বাংলা সনের এই চালু হওয়ার পেছনে এক বিশেষ ঘটনা রয়েছে। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকের একেবারে শেষ পর্যায়ে শশাঙ্ক গুপ্ত স্বাধীনভাবে গৌড় রাজ্যের রাজা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। ৫৯৪ খ্রিস্টাব্দে এই বিশেষ ঘটনাকে সর্বদা জাতে মনে রাখা যায় সেই কারণেই বাংলা সনের সৃষ্টি হয়।
এই ১২ টি মাস নিয়ে বাংলা মাস গুলি গঠিত সেই মাস গুলি হল- ১) বৈশাখ, ২) জ্যৈষ্ঠ, ৩) আষাঢ়, ৪)শ্রাবণ, ৫)ভাদ্র, ৬) আশ্বিন, ৭) কার্তিক, ৮) অগ্রহায়ণ, ৯)পৌষ, ১০) মাঘ, ১১) ফাল্গুন, ১২) চৈত্র।
বাংলার ছটি ঋতু-
১) গ্রীষ্ম, ২) বর্ষা, ৩) শরৎ, ৪) হেমন্ত, ৫) শীত, ৬) বসন্ত -এর হিসাব বাংলা মাস অনুযায়ীই রাখা হয়।
বাংলা মাস এবং বাংলা তারিখ আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। কিন্তু আজ বাংলা কত তারিখ, বাংলা কি মাস এসব কিছুই আমাদের কাছে অজানা। কিন্তু আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনারা বাংলা মাস, বাংলা তারিখ, বাংলা সন এইসব তথ্যের ব্যাপারে সমস্ত জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।
বাংলা মাস -এর এই গুরুত্বগুলি আজ আমরা জানলাম। আমাদের সকলের উচিত বাংলা ক্যালেন্ডারকে সম্মান জানিয়ে বাংলা বছর, বাংলা মাস এবং বাংলা তারিখ গুলির হিসাব রাখা। আর এই কাজে আপনাদের সাহায্য করবে আমাদের সাইট যাতে “আজকের বাংলার তারিখ”, “এটা বাংলা কি মাস” এবং “বাংলার কোনো বছর” এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাদের অসুবিধা না হয়।